আজ বুধবার সকালে বিশ্বের ১২৪টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে আইকিউ এয়ারের মানসূচকে ঢাকার সার্বিক বায়ুর মান ৫১৮। বায়ুদূষণের মান ৩০০ পার হলেই তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়। অর্থাৎ যেসব স্থানে বায়ুর মান এমন, সেখানে দূষণ পরিস্থিতি ভয়ানক রকম খারাপ। আজ বাতাসে যে ভয়াবহ দূষণ, তা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন পরিবেশ–বিশেষজ্ঞরা। বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
ঢাকার সার্বিক বায়ুর মান তো আগেই বলা হলো, ৫০০ পার হয়েছে। কিন্তু নগরীর কিছু স্থানে এ মান হাজার পার হয়ে গেছে। ঢাকা ও আশপাশের সর্বোচ্চ দূষিত পাঁচ এলাকার মধ্যে সর্বাগ্রে আছে ইস্টার্ন হাউজিং, সেখানকার বায়ুর মান ১ হাজার ৮৫। এরপর আছে গোরান (৮২৭), কল্যাণপুর (৬৬৩) ও গুলশান লেক পার্ক (৬৪৮)। ঢাকার আজ শীর্ষ ১০ দূষিত এলাকার মধ্যে ৯টির মানই ৩০০–এর ওপরে।গত ডিসেম্বরের একটি দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বায়ুর মান গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ৬০০ পার হতে দেখেছি। তবে সেই দূষণ ছিল ভোরের দিকে। সকালের দিকে ধীরে ধীরে মান উন্নত হয়েছে। কিন্তু আজ সকালে যে ভয়াবহ দূষণ দেখা যাচ্ছে, তা অস্বাভাবিক। আজকের দূষণ এই নতুন বছরে সর্বোচ্চ।’ আজ বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম স্থানে আছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভো। আইকিউ এয়ারের মানসূচকে শহরটির স্কোর ৫২৮।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো, বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে প্রায় ৬৭ গুণ বেশি।