Notification texts go here Contact Us Buy Now!


 

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে দেওয়া ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা

    

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ক্ষমতায় বসেই যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ বাতিল করে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদেশ জারির সঙ্গে সঙ্গেই সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করা হয়েছে ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত ২২টি অঙ্গরাজ্য ও ২টি শহরের পক্ষ থেকে। অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এ আইনি লড়াইয়ে শরিক হয়েছে নাগরিক অধিকারসংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠনও।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদন অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর সব ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন বা নিউ হ্যাম্পশায়ারের কনকর্ডে দায়ের হয়েছে। গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ সময় অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসেবেও বর্ণনা করেন তিনি।

এরপর নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনার কথা জানান ট্রাম্প, যার আওতায় অবৈধ কোনো অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসব করলে, সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। দায়িত্ব নিয়েই ফেডারেল সরকারের সংস্থাগুলোকে ট্রাম্প নির্দেশ দেন, কোনো অবৈধ অভিবাসী অথবা সাময়িক ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, এমন কেউ সন্তান জন্ম দিলে সেই শিশুকে যেন মার্কিন নাগরিকত্বসংক্রান্ত নথি দেওয়া না হয়।

ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বোস্টনের ফেডারেল আদালতে জোটবদ্ধভাবে মামলা করেছে ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ। মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার এ চেষ্টা মার্কিন সংবিধানের ভয়ানক লঙ্ঘন। মামলায় আরও বলা হয়েছে, বৃহত্তর পটভূমিতে প্রেসিডেন্টের অভিবাসন আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আছে। তা সত্ত্বেও নাগরিকত্বের অধিকার কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্টের আইনি এখতিয়ারবহির্ভূত। এ মামলার আগে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন, কয়েকটি অভিবাসী সংগঠন ও অন্তঃসত্ত্বা এক নারী একই ধরনের মামলা করেন। মামলাগুলোকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ট্রাম্পের প্রথম বড় আইনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ প্ল্যাটকিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ট্রাম্পের এমন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে আজকের এ মামলা দায়ের ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এই স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে আমরা আমাদের অধিবাসী ও তাদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে দাঁড়াব। ট্রাম্প এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পরপরই আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুকে নাগরিকত্ব না দেওয়ার আদেশ শুধু অসাংবিধানিক নয়, একইসঙ্গে তা মার্কিন মূল্যবোধের বেপরোয়া ও নির্মম প্রত্যাখ্যান।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে অবশ্য হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে ট্রাম্পের আরও কিছু আদেশের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলো ও বিভিন্ন পরামর্শক গোষ্ঠী মামলা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বে ট্রাম্প প্রশাসনের গঠন করা ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ ও সরকারি কর্মীদের চাকরির সুরক্ষাব্যবস্থা দুর্বল করে রিপাবলিকানদের সই করা এক আদেশের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।

ম্যাসাচুসেটস ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে দায়ের হওয়া মামলাগুলোতে আদালতের বিচারকেরা আদেশ দিলে তা বোস্টনভিত্তিক ফার্স্ট ইউএস সার্কিট কোট অব আপিল পর্যালোচনা করে দেখবেন। এ আদালতের পাঁচ ফেডারেল বিচারপতির সবাই ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টদের নিয়োগ পাওয়া, জাতীয় পর্যায়ে যা বিরল ঘটনা। জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব সুবিধা নিয়ে নতুন নিয়ম ট্রাম্প কীভাবে কার্যকর করতে চান, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এ সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সংরক্ষিত একটি বিষয়। ট্রাম্প যদি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এ সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে চান, তবে তাকে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চকক্ষ সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন পেতে হবে।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.